অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা, ১৯৯৫

বিস্তারিত / তফসিল
বিজ্ঞপ্তি
নং ভূঃমঃ/শা-৮/খাজব/৪৬/৮৪/১২৫- অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্তের বিষয়ে সরকার নিম্নে বর্ণিত নীতিমালা প্রণয়ন করিয়াছে। এতদ্বারা অনুমোদিত নীতিমালা সকলের অবগতির জন্য জারী করা হইল । গেজেট প্রকাশনার তারিখ হইতে এই নীতিমালা কার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে ।
প্রজ্ঞাপন
বিষয় ঃ অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্তের নীতিমালা (সর্বশেষ সংশোধনীসহ
১.০ ভূমিকা:
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাধীনে কৃষি ও অকৃষি এই দুই প্রকারের খাসজমি আছে। কৃষি খাসজমি বন্দোবস্তের একটি নীতিমালা আছে। কিন্তু অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্তের কোন নীতিমালা না থাকায় অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান দীর্ঘদিন ধরিয়া বন্ধ আছে। ফলে শহরাঞ্চলে অকৃষি খাসজমি কোন না কোনভাবে প্রভাবশালী মহলের লোকজনেরঅবৈধ দখলে চলিয়া গিয়াছে এবং তাহারা দখলের সমর্থনে জাল-জালিয়াতীর মাধ্যমে কাগজ-পত্র তৈরী করিয়া আদালত হইতে ডিক্রী লাভ করিতেছেন বা প্ৰচেষ্টা চালাইতেছেন। তাই অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রয়োজন । এই নীতিমালায় খাসজমি বলিতে কেবলমাত্র জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডকৃত সরকারী খাসজমি বুঝাইবে। অন্য কোন সংস্থা বা বিভাগের নামে রেকর্ডকৃত সরকারী জমি বুঝাইবে না। পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে বনায়নের জন্য যে সকল জমির প্রয়োজন হইবে তাহা বন আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী বন ও ভূমি হিসাবে গেজেট নোটিফিকেশনকৃত জমি এবং বন আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী 'রক্ষিত বনভূমি' হিসাবে ঘোষিত জমি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া এই নীতিমালার আওতায় বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে না। অধিকন্ত এই ধরনের কেইস ভূমি মন্ত্রণালয় এর নীচে কোন পর্যায়ে নিষ্পত্তি করা হইবে না। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করিতে গিয়া যদি কোথাও কোন জমি সম্পর্কে কোন সরকারী সংস্থা বা বিভাগের সাথে জমি মালিকানা বা দখলগত বিষয়ে কোন অস্পষ্টতা বা দ্বিমত থাকে তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা বিভাগের সাথে আলোচনা ক্রমে নিষ্পত্তি সাপেক্ষে এই নীতিমালার আওতায় উক্ত জমি বন্দোবস্তের কার্যক্রম গ্রহণ করা হইবে ।
২.০ সংজ্ঞাঃ
(ক) অকৃষি খাসজমি : দেশের ৪টি মেট্রোপলিটন এলাকার সকল পৌর এলাকা এবং সকল থানা সদর বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী শহরাঞ্চল হিসাবে বিবেচিত হইবে। এই সকল এলাকাভুক্ত কৃষিযোগ্য খাসজমি ও অকৃষি খাসজমি হিসাবে বিবেচিত হইবে। ইহার বাহিরে অবস্থিত কৃষিযোগ্য জমি বাদে অন্যান্য সকল জমি অকৃষি খাসজমি হিসাবে বিবেচিত হইবে ।
(খ) থানা সদরঃ যে সকল থানা সদরে পৌরসভা আছে সে সকল থানা থেকে পৌরসভার এলাকা এবং অন্যান্য থানার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কর্তৃক বিভাগীয় কমিশনারের লিখিত পূর্ব অনুমোদনক্রমে চিহ্নিত এলাকাকে থানা সদর এলাকা হিসাবে গণ্য করা হইবে। জেলা প্রশাসকগণ এই নীতিমালা জারীর তারিখ হইতে ১৮০ দিনের মধ্যে পৌরসভা নাই এমন সকল থানা সদরের সীমানা চিহ্নিত করার কার্য সম্পাদন করিবেন। অবশ্য পরবর্তীতে যদি কোন থানা সদরে পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয় তাহা হইলে পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তারিখ হইতে পৌরসভা এলাকাকেই ঐ থানার সদর হিসাবে বিবেচনা করা হইবে ।
(গ) বাজার দর : প্রচলিত নিয়মে নির্ধারিত মূল্যকেই বাজার দর হিসাবে গণ্য করা হইবে ৷
৩.০ অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্তের নীতিমালাঃ
(ক) সরকারী প্রয়োজনে যে কোন সরকারী দপ্তর বা সংস্থাকে অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে। তবে সেই ক্ষেত্রে বাজার দর অনুযায়ী জমির উপর্যুক্ত মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে।
(খ) ধর্মীয় উপাসনালয়, এতিমখানা, কবরস্থান ও শ্মশানঘাট স্থাপনের জন্য পরিমাণ মত জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। এই ক্ষেত্রে বাজার দর অনুযায়ী জমির মূল্য নির্ধারণ করিয়া নির্ধারিত মূল্যের ১০% মূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(গ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিমাণ মত জমি নির্ধারিত মূল্যের ১০% মূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে
(ঘ) প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও সরকার কর্তৃক বৈধ ভাবে পূনর্বাসিত লোকজনকে সংশ্লিষ্ট জমি সরকারের অন্য কোন প্রয়োজনে না লাগিলে দখল বিবেচনায় আনিয়া পরিবার প্রতি সর্বোচ্চ ০.০৫ একর (পাঁচ শতাংশ) জমি দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। তবে নারায়নগঞ্জসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় এই ধরনের বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে না ।
(ঙ) বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্যিক বা জাতীয় পর্যায়ে নিজ অবদানের জন্য বিশেষভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিকে সরকার প্রধানের অনুমোদনক্রমে মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ০.০৫ একর (পাঁচ শতাংশ) এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে সর্বোচ্চ ০.০৮ (আট শতাংশ) পর্যন্ত জমি বাজার দরে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। তবে এই ক্ষেত্রে সরকার প্রধান ইচ্ছা করিলে রেয়াতী মূল্যে বন্দোবস্তের আদেশ দিতে পারিবেন।
(চ) প্রবাসী বাংলাদেশীরা যদি রেজিষ্ট্রিকৃত সমবায় এর মাধ্যমে বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ (ন্যূনপক্ষে পাঁচ তলা ভবন হইতে হইবে) এর জন্য জমি বন্দোবস্ত নিতে চান তাহা হইলে তাহাদিগকে মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ১.০ একর এবং জেলা শহরে সর্বোচ্চ ৩.০ একর পর্যন্ত জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে; তবে এই ক্ষেত্রে তাহাদেরকে জমির সমূদয় মূল্য বৈদেশিক মূদ্রায় পরিশোধ করিতে হইবে এবং তাহাদের দলে একই পরিবারের একজনের বেশী সদস্য থাকিতে পারিবেন না। বহুতল বিশিষ্ট ভবনের জন্য সমবায়ের প্রতি দুইজন সদস্যের জন্য ০.০২৫ একর (২৫ শতাংশ) হিসাবে জমির পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে ।
(ছ) শহর এলাকার বাহিরে শিল্প স্থাপনের জন্য আবেদনকারী যদি মোট প্রয়োজনীয় জমির ৩/৪ অংশ নিজে সংগ্রহ করেন তাহা হইলে সর্বোচ্চ ১/৪ অংশ পরিমাণ সংলগ্ন খাসজমি বাজার দরে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(জ) অন্তত [ ৫ ] বৎসরের বেশী সময় ধরিয়া নিয়মিত ভাবে সরকারী পাওনা পরিশোধ করিয়া একসনা লীজমূলে জমির দখলে আছেন এমন লোকদেরকে সর্বোচ্চ ০.০৫ একর (পাঁচ শতাংশ) জমি বাজার দরে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে।
(ঝ) যে সকল অধিগ্রহণকৃত জমি পুনঃ গ্রহণের মাধ্যমে খাস করা হইয়াছে বা হইবে সেই সকল জমির মূল মালিক বা তাহার বৈধ উত্তরাধিকারীদেরকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদত্ত অর্থ সমন্বয় না করিয়া বাজার দরে মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ০.০৮ একর (আট শতাংশ) জেলা ও থানা সদরে এবং পৌর এলাকায় সর্বোচ্চ ০.১৬ একর (ষোল শতাংশ) এবং ইহার বাহিরে এলাকায় সাবান সর্বোচ্চ ০.৩২ একর (বত্রিশ শতাংশ) জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে জমির পরিমাণ তাহার নিকট হইতে অধিগ্রহণকৃত জমির অর্ধেক অপেক্ষা বেশী হইতে পারিবে না। তবে কাহাকেও শহর এলাকায় মোট ০.০৪ একর (চার শতাংশ) এবং পল্লী এলাকায় ০.১০ একর (দশ শতাংশ) অপেক্ষা কমও দেওয়া হইবে না। তাহা ছাড়া যেহেতু বন্দোবস্ত গ্রহীতা জমির পূর্বতন মালিক সেহেতু তাহাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হইবে। অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত এমন ভূমি মালিকের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র একজনকেই সুবিধা দেওয়া হইবে। এইরূপ বন্দোবস্ত প্রদানে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগিবে ।
(ঞ) মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা শহরের বাহিরে গবাদিপশু বা দুগ্ধ খামার এবং হাস-মুরগী খামার স্থাপনের জন্য অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। তবে এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণানালয় কর্তৃক প্রকল্পটি অনুমোদিত হইতে হইবে। হাস-মুরগীর খামারের জন্য সর্বোচ্চ ২.০ একর এবং গবাদি পশু ও দুগ্ধ খামারের জন্য সর্বোচ্চ ৫.০ একর জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। বন্দোবস্ত প্রাথমিকভাবে ১০ বৎসরের জন্য দেওয়া হইবে। প্রথম ৫(পাঁচ) বৎসরের মধ্যে যদি প্রকল্পটি পুরাপুরি প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত এবং বন্দোবস্তের সকল শর্ত যথাযথভাবে পালিত হয় তাহা হইলে একই জমি পরিবর্তীতে সন্তোষজনক পরিচালনার শর্তে দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্তে রূপান্তর করা যাইবে। তবে প্রথম পাঁচ বৎসরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত না হইলে বা পরবর্তীতে যে কোন সময় পরিত্যক্ত হইলে বা বন্দোবস্তের শর্ত যথাযথভাবে পালিত না হইলে বন্দোবস্ত যে কোন সময় বাতিল করিবার শর্ত চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকিবে। যদি কেহ নিজ জমিতে হাস-মুরগীর খামার বা দুগ্ধ খামার করিয়া থাকেন তাহা হইলে তাহাকে তাহার খামার সংলগ্ন খাস জমি উপরোক্ত সময়ে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(ট) [স্থগিত ]।
(ঠ) বিদেশী বিনিয়োগকারীদেরকে অথবা যৌথ উদ্যোক্তাদেরকে শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ জমি মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। এই ক্ষেত্রে অনুমোদিত প্রকল্প অনুপাতে জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হইবে। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের হোটেল/মোটেল (তিন তারকা ও তদুর্ধে) স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(ড) কারখানা ও বাড়ী সংলগ্ন খাসজমি আছে এবং এই খাসজমির অবস্থান এমন যে উহা অন্য কাহাকেও বন্দোবস্ত প্রদান করিলে বাড়ী বা শিল্প কারখানায় যাতায়াতসহ অন্যান্য অসুবিধা সৃষ্টি হইবে সেক্ষেত্রে বাড়ীর মালিক বা শিল্প কারখানার অনুকূলে বিশেষ ব্যবস্থা হিসাবে এই খাসজমি (কৃষি বা অকৃষি যাহাই হোক না কেন) বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। তবে এইরূপ বন্দোবস্ত কেসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কর্তৃক সরেজমিনে তদন্ত সম্পাদন করিয়া এবং প্রচলিত নিয়মে সেলামী ধার্য্য করিয়া প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাইতে হইবে।
(ঢ) কমপক্ষে ২০ বৎসর বা তদুর্ধকাল যাবত সরকারি/আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার চাকুরীতে নিয়োজিত আছেন বা ছিলেন এইরূপ কমপক্ষে ৩০ জন বা তদুর্ধ সংখ্যক সদস্য বিশিষ্ট সরকারী/আধা সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারী বা কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত সমবায় সংগঠনকে বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক ভবন (ন্যূনপক্ষে পাঁচতলা ফ্লাট বাড়ী) নির্মাণের জন্য যে মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ১.০ (এক) একর এবং জেলা বা থানা শহরে সর্বোচ্চ ৩.০ (তিন) একর পর্যন্ত খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। মেট্রোপলিটন এলাকা বা জেলা শহরে বাড়ী বা বাড়ী করিবার মত জমি আছে এইরূপ কোন সরকারী/আধা সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারী/কর্মকর্তাকে সংগঠনের সদস্য করা যাইবে না। বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মানের জন্য সমবায়ের প্রতি দুইজন সদস্যের জন্য ০.০২৫ একর (২.৫ শতাংশ) হিসাবে জমির পরিমাণ করিতে হইবে এবং ইহাতে সরকার প্রধানের অনুমোদন লাগিবে।
(ণ) কমপক্ষে ১৫ জন বা তদুর্ধ সংখ্যক সদস্যবিশিষ্ট প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সমবায় গঠিত সমবায় সংগঠনকে বহুতলবিশিষ্ট আবাসিক ভবন (নূন্যপক্ষে পাঁচতলা ফ্ল্যাট বাড়ী) নির্মানের জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ১.০ (এক) একর এবং জেলা বা থানা সদরে সর্বোচ্চ ৩.০ (তিন) একর পর্যন্ত খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। মেট্রোপলিটন এলাকা বা জেলা শহরে বাড়ী বা বাড়ী করার মত জমি আছে এইরূপ কোন মুক্তিযোদ্ধাকে সংগঠনের সদস্য করা যাইবে না। বহুতলবিশিষ্ট ভবন নির্মানের জন্য সমবারের প্রতি দুইজন সদ্যসের জন্য ০.২৫ একর (২.৫ শতাংশ) হিসাবে জমির পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া বন্দোবস্ত দেওয়া হইবে। এইরূপ বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মে ধার্যকৃত সেলামী আদায় করিতে হইবে এবং ইহাতে সরকার প্রধানের অনুমোদন লাগিবে।
(ত) (i) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিদেশে রপ্তানীর উদ্দেশ্যে ফুলের চাষ করার জন্য সর্বোচ্চ ৫.০০ (পাঁচ) একর পর্যন্ত খাসজমি দীর্ঘ-মেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(ii) বিভিন্ন প্রকার ফলের বাগান করার জন্য সর্বোচ্চ ১৫.০ (পনের) একর পর্যন্ত খাসজমি দীর্ঘ- মেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে।
(iii) (রাবার, বাঁশ, বেত, পার্টি ও পাতি গাছ চাষের জন্য কোন ব্যক্তি বিশেষকে সর্বোচ্চ ৩0.0 (ত্রিশ) একর এবং নিবন্ধনকৃত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীকে সর্বোচ্চ ১০০.০০ (একশত) একর পর্যন্ত খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(iv) উপরোক্ত (i), (ii) ও (iii) নং উপ-অনুচ্ছেদে বর্ণিত জমি বন্দোবস্ত প্রদানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগিবে। তবে সরকার প্রধানের অনুমোদনক্রমে বর্ণিত জমি অপেক্ষা অধিক পরিমাণ জমিও বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে ।
(v) ( নীতিমালার ৩.০ (ত) (iv) অনুচ্ছেদের পর নতুন ৩.০ (৩)(v) অনুচ্ছেদ
নিম্নরুপভাবে সংযোজিত হইবেঃ-
“ঔষধি বৃক্ষ উৎপাদনের জন্য ব্যক্তিবিশেষকে সর্বোচ্চ ৫.০০ (পাঁচ) একর এবং নিবন্ধনকৃত লিমিটেড কোম্পানীকে সর্বোচ্চ ১০.০০ (দশ) একর পর্যন্ত খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে। এই ক্ষেত্রে ঔষধি উৎপাদনের সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং ঔষধ শিল্প বিকাশে ইহার গ্রহণযোগ্যতা/অবদান থাকিতে হইবে। তবে, সরকার প্রধানের অনুমোদনক্রমে বর্ণিত জমি অপেক্ষা অধিক পরিমাণ জমিও বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে।”],
(থ) উপরোক্ত ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে শহর এলাকার খাসজমি ৭ নিলামের মাধ্যমে সেলামী নির্ধারণ পূর্বক স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করা হইবে।
(দ) খাস খতিয়ান রেকর্ডভুক্ত জনগণের ব্যবহার্য রাস্তা, ঘাট, নদী, খাল, নালা, পয়ঃপ্রণালী পুকুর, বাধ, কবরস্থান, শ্মশান, পার্ক, খেলার মাঠ ও ভূমি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের দপ্তরের এলাকাধীন জমি বন্দোবস্তের আওতায় আসিবেনা। এইগুলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালা সাপেক্ষে
স্বতন্ত্রভাবে প্রনীত সংরক্ষনীয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত থাকিবে। হাট-বাজারের জমিও এই নীতিমালার আওতায় বন্দোবস্তযোগ্য হইবে না।
(ধ) (পাহাড় ও পাহাড়ের ঢালু জমি বন্দোবস্ত প্রদানের ক্ষেত্রে ভূ-প্রকৃতি অর্থাৎ প্রাকৃতিক অবস্থার কোন রূপান্তর না করার শর্তাধীনে উৎপাদনশীল কার্যে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে।)
[স্থগিত]
৪.০ প্রস্তাবিত বন্দোবস্ত কার্যক্রমঃ
(ক) | নিলামের মাধ্যমে সেলামী নির্ধারণ পূর্বক স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান ছাড়া ] মেট্রোপলিটন এলাকার যে কোন অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার প্রধানের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(খ) জেলা শহরে ০.০৮ একর (আট শতাংশ) এর উর্ধ্ব পরিমাণ, থানা সদরে ০.১৬ একর (ষোল শতাংশ) এর উর্ধ্ব পরিমাণ এবং ইহার বাহিরের ০.৩০ একর (ত্রিশ শতাংশ) এর উর্ধ্ব পরিমাণ জমি বন্দোবস্তের সকল প্রস্তাবে ভূমি সংস্কার বোর্ড হইতে অনুমোদন দেওয়া হইবে। ইহা অপেক্ষা কম পরিমাণ জমির ক্ষেত্রে নীতিমালার অধীনে বন্দোবস্ত কেইস বিভাগীয় কমিশনার পর্যায়ে চূড়ান্ত হইবে। প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার প্রধানের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে ।
(গ) সকল ক্ষেত্রেই জেলা প্রশাসক প্রার্থীত জমির সেলামী নির্ধারণ করতঃ কেস রেকর্ড সৃজনপূর্বক যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বন্দোবস্ত প্রস্তাব প্রেরণ করিবেন ।
৫.০ যে সকল কারণে বন্দোবস্ত বাতিল হইবে :
(ক) জমি যে উদ্দেশ্যে বন্দোবস্ত প্রদান করা হইবে তাহা বন্দোবস্ত অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হইলে।
(খ) বন্দোবস্ত গ্রহীতা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে চুক্তিপত্রের কোন শর্ত ভঙ্গ করিলে।
(গ) ভূমি সংক্রান্ত সরকারী আইন/অধ্যাদেশ/আদেশ লংঘন করিলে 1
(ঘ) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে বন্দোবস্ত বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের অনুমতি দেওয়া হইলে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হইলেও বন্দোবস্ত বাতিল এবং প্রদত্ত কিস্তির টাকা বাজেয়াপ্ত হইবে ।
(ঙ) বন্দোবস্ত গ্রহণের পর কোন প্রয়োজনীয় তথা গোপন রাখা বা শর্ত ভঙ্গের ঘটনা প্রকাশ হইলে বন্দোবস্ত অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ বন্দোবস্ত বাতিল ও প্রদত্ত মূল্য বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবেন ।
৬.০ কোন খাস জমি দীর্ঘ-মেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হইলে সেই জমির জন্য জেলা প্রশাসক আলাদা একটি খতিয়ান খুলিবেন। সেই খতিয়ানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নাম এবং জেলা প্রশাসকের নীচে বন্দোবস্ত প্রাপকের নাম লিপিবদ্ধ থাকিবে। তাহা ছাড়া বন্দোবস্তের মেয়াদ আরম্ভ ও শেষ হওয়ার তারিখ লিপিবদ্ধ থাকিবে। এই দীর্ঘ-মেয়াদী বন্দোবস্তের ফলে বন্দোবস্ত গ্রহীতাকে সংশ্লিষ্ট জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করিতে হইবে। ভূমি উন্নয়ন কর সংক্রান্ত তথ্যাবলী বন্দোবস্ত দলিলে ও খতিয়ানে উল্লেখ করিতে হইবে ।
৭.০ বন্দোবস্ত গ্রহীতা জমির দখল প্রদানের তারিখ হইতে নির্ধারিত হারে ভূমি উন্নয়ন কর ও অন্যান্য কর প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।
৮.০ বন্দোবস্তকৃত জমি সম্পর্কে উদ্ভূত যেকোন বিতর্কিত বিষয়ে সরকারী সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
৯.০ এই নীতিমালা প্রণয়নের পর হইতে অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান সংক্রান্ত পূর্বের সকল নীতিমালা সার্কুলার স্মারক, নির্দেশ ইত্যাদি বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। অবশ্য ইতিপূর্বে বলবৎ নীতিমালা সার্কুলার ইত্যাদি বলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সকল বৈধ বন্দোবস্ত আদেশ বহাল থাকিবে। এই নীতিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন সংশ্লিষ্ট সময়ে বলবৎ আইন ও বিধি সকল সময়ে উহার উপর কার্যকর হইবে।
১০.০ প্রয়োজন অনুসারে এই নীতিমালা পরিবর্তন করা যাইবে এবং কেবলমাত্র নীতিমালার ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে সরকার প্রধানের সার্বিক এখতিয়ার সংরক্ষিত থাকিবে
১১.০ [ এই নীতিমালা রাঙামাটি,বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি এই তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত অন্যান্য সকল জেলার জন্য প্রযোজ্য হইবে। রাংগামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানের জন্য এই জেলা সমূহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিশেষ আইন ও সরকারী নির্দেশ কার্যকর
হইবে ।
মন্তব্যসমূহ (0)
মন্তব্য করতে লগইন করুন।
এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি। প্রথম মন্তব্যকারী হোন!